ক্যাস্টর অয়েল কি? ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম জেনে নিন
ক্যাস্টর অয়েলের সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। আমরা জানি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এই ক্যাস্টর অয়েল। এর মধ্যে থাকা রিসিনোলেইক এসিড নামক উপাদান নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। এই উপাদান শুধু মাত্র ক্যাস্টর ওয়েল ও এক জাতের ফাংগিতে পাওয়া যায়।
ক্যাস্টর অয়েল কি?
ক্যাস্টর অয়েল বাংলায় রেড়ির তেল নামে পরিচিত। অনেকে হিন্দিতে একে আরান্ডি কা তেল বলে থাকেন। এই তেল ত্বক, চুলের পরিচর্যায় বিশেষ উপকারী। এর ভিতর রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এন্টিব্যাক্টেরিয়াল প্রপার্টিস। এই উপাদান প্রদাহ হ্রাস করে , জীবাণু সংক্রমন কমায়। এটি একটি প্রাকৃতিক গুণাগুন সম্পন্ন ভেষজ তেল।
ক্যাস্টর ওয়েলের প্রাপ্তিস্থান
এই তেল মূলত আফ্রিকা ও ভারতে পাওয়া যায়। এই তেল সাধারনত ২ রকম হয়ে থাকে। কল্ড প্রেস্ড কাসটার অয়েল ও ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েল। তবে এদের উপাদান একই। এগুলো তৈরি করার প্রণালী ভিন্ন।
ক্যাস্টর ওয়েলে কি কি গুনাগুন রয়েছে?
ক্যাস্টর ওয়েলে রয়েছে নানা প্রাকৃতিক উপাদান। যা আমাদের ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই তেল চুলের গোড়া শক্ত করে এবং নতুন চুল গজাতে বিশেষ সহায়তা করে থাকে। এই তেলে রয়েছে ওমেগা থ্রি , ওমেগা সিক্স ফ্যাটি আসিড ও ভিটামিন ই।
ক্যাস্টর অয়েলের উপকারীতা
ত্বকের যত্নে ক্যাস্টর অয়েলের নানা রকম উপকারীতা রয়েছে। এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে সেগুলো উল্লেখ করা হলো।
- ত্বক উজ্জ্বল করতে ক্যাস্টর অয়েল ও হলুদের প্যাক বিশেষ উপকারী।
- লেবুর রস, মধু ও ক্যাস্টর অয়েলের মিশ্রণ ব্যবহার করলে ত্বকে থাকা কালো দাগ দূর হবে।
- ব্রণ প্রতিরোধে ক্যাস্টর অয়েলের ব্যবহার রয়েছে।
- সুন্দর গোলাপী ঠোঁট পেতে চান? তাহলে চিনির সাথে স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করুন।
- চোখের নিচে কালো দাগ? চিন্তা নেই রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য ক্যাস্টর অয়েলের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে চোখের নিচে ব্যবহার করুন। দেখবেন চোখের নিচের কালো দাগ একদম গায়েব।
- পিগমেন্টেশন রোধে এই তেল খুব উপকারী। রাতে ঘুমানোর আগে আক্রান্ত যায়গায় হলুদের সাথে ব্যবহার করুন ক্যাস্টর অয়েল। উপকার পাবেন।
- গর্ভবতী মহিলাদের স্ট্রেস মার্ক বা ওজন বৃদ্ধির জন্য স্ট্রেচ মার্কস হয়ে থাকলে তা দূর করতে সাহায্য করে ক্যাস্টর অয়েল। নিয়মিত হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন দাগের উপর।
- এজ রিঙ্কেলস দূর করতে ব্যবহার করা যেতে পারে ক্যাস্টর অয়েল।
- মেকআপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ক্যাস্টর ওয়েল।
চুলের যত্নে ক্যাস্টর অয়েলের উপকারীতা
চুলের যত্নে ক্যাস্টর অয়েলের কোন জুড়ি নেই। ক্যাস্টর ওয়েল বা রেড়ির তেল চুল ওঠা কমায়। চুল ওঠা কমাতে মেথির সাথে ক্যাস্টর অয়েলের মাস্ক তৈরি করে নিন। এই মাস্ক চুলে লাগান প্রতি সপ্তাহে। এতে আপনার চুল ওঠা কমে যাবে আর চুলের গোড়া হবে শক্ত ও মজবুত।
চুলের খুশকি দূর করতে ক্যাস্টর তেল ভালো কাজ করে থাকে। প্রতিদিন সাধারন তেলের সাথে মিশিয়ে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারে আপনার মাথার খুশকি হবে দূর।
যাদের মাথায় পাকা চুল রয়েছে তারা এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে হট কাস্টার অয়েল ম্যাসাজ করুন। এতে সাদা চুলের সমস্যা দূর হবে।
চুল পড়া প্রতিরোধে ও নতুন চুল গজাতে ক্যাস্টর অয়েলের মাস্ক
যাদের প্রচুর পরিমানে চুল পড়ে তাদের জন্য একটি হেয়ার মাস্ক এর প্রণালী শেয়ার করলাম। চুলের রুক্ষতা দূর করতে ও নতুন চুল গজাতে দারুন কাজ করে ক্যাস্টর ওয়েল। ভালো ফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে ১বার করে নিয়মিত ২ মাস ব্যবহার করতে হবে।
রাতে ঘুমানোর আগে আলতো হাতে সারা মাথার স্ক্ল্যাল্পে ব্যবহার করুন। মাথায় লাগিয়ে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করতে হবে। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। আরও ভালো ফল পেতে এর সাথে একটি ভিতামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। চোখের পাপড়ি ঘন করতেও এই তেল ব্যবহার করতে পারেন।
<< << অনলাইনে ক্যাস্টর অয়েল কিনতে ও দাম জানতে ভিজিট করুন >> >>
সতর্কতা
চুলে ব্যবহারের জন্য তৈরী বোতলের ক্যাস্টর অয়েল মুখ থেকে দূরে রাখুন।
ক্যাস্টর অয়েলের পার্শপ্রতিক্রিয়া
- অতিরিক্ত ব্যবহারে বমি বমি ভাব হতে পারে
- ক্যাস্টর অয়েলে রিসিন নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে। এই উপাদান এর কারনে ডায়রিয়া ও ত্বকের জালুনি ভাব হতে পারে। ত্বকে লাল ভাবও হতে পারে।
- অতিরিক্ত ব্যবহারের কারনে পেশী দুর্বলতা এবং পেশীর টান ভাব সৃষ্টি করতে পারে ।
- দুই বছরের কম শিশুদের ক্ষেত্রে এই তেলের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আশা করি ক্যাস্টর অয়েলের সম্পর্কে আপনাদের নানা রকম তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পেরেছি। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে করতে পারেন।
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত